Joseph Campbell
ক্যাম্পবেল যুক্তিবাদী। তবে ঈশ্বরে তাঁর বিশ্বাস আছে। তিনি বড় হয়েছেন ক্যাথলিক হিসেবে। তার পড়াশোনার বিষয়বস্তু তুলনামূলক পুরাণতত্ব (Comparative Mythology)। যেসব পুরাণ আজ পর্যন্ত টিকে আছে তার সামান্যই মৌলিক। তাই বিভিন্ন পুরাণের তুলনামূলক বিচারের সাথে সাথে পুরাণকে আক্ষরিক অর্থে নেওয়ার বদলে প্রতিকী অর্থে নেওয়া ক্যাম্পবেলের একটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে যায়। ফলত, তাঁর ঈশ্বর ঠিক ধর্মগ্রন্থের ঈশ্বর নয় এবং বিজ্ঞানের সাথেও সাংঘর্ষিক নয়। একথা মনে রাখা প্রয়োজন, বিজ্ঞানের জগতটা অনেকটা এগিয়েছে, তাঁর সময়ে তিনি অনেককিছু জানতেন না বা অন্যভাবে জানতেন। বস্তুত, তিনি অবিশ্বাস ও বিশ্বাসের সীমানায় বিশ্বাসের পাশে দাঁড়ানো খানিকটা বিশ্বাসী, খানিকটা প্রকৃতিবাদী একজন মানুষ।
তার দীর্ঘজীবনের পুরাণ সম্পর্কিত পড়াশোনা তার নিজস্ব জীবনদর্শনে বড়সড় প্রভাব ফেলেছে। সেই দর্শনকে তিনি নিজের ভাষায় বলেন, “Follow your bliss.” ধর্মীয় সংস্কারের বিশ্বাসের তুলনায় তার দর্শন মৌলিকভাবে আলাদা। তার বিশ্বাস সহনশীল কিন্তু ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের প্রশ্নে অনমনীয়। প্রকৃতির সাথে একাত্মতা এবং পৃথিবীর দুঃখ-বেদনা মেনে নিয়ে বেঁচে থাকা, ভালোবাসা তার দর্শনের অংশ। ক্যাম্পবেলের চরিত্রের বয়ানের প্রাসঙ্গিকতা এখানেই। বস্তুত তার দর্শন ও তার জীবনাচরণের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। ধর্ম এবং এর হাজারো নিয়ম থেকে মুক্ত হয়ে তিনি পুরাণকে প্রতিকী অর্থে নিয়ে তা থেকে জীবনদর্শন ও নৈতিকতার কাঠামো তৈরী করেছেন। এজন্যই বৈজ্ঞানিক সত্যগুলোকে মেনে নিতেও তার দ্বিধা হয়নি।