Reading E-Books for dummies অথবা কীভাবে ইবুক পড়তে হয়...

Also known as:

ফরম্যাট

বই বলতে আমাদের সাধারণত মাথায় আসে পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় লেখা। স্বাভাবিকভাবেই PDF সবচেয়ে সরল মনে হয়। ইবুকের দুনিয়ায় পিডিএফ কিন্তু এখন ব্রাত্যে পরিণত হচ্ছে। যত আধুনিক ফরম্যাট সবই রিফ্লোয়েবল। অর্থাৎ কিনা, আপনার স্ক্রিনের সাইজ যাই-ই হোক না কেন, আর তাতে আপনি ফন্ট যেমন বড়-ছোটই করুন না কেন, লেখা রিফ্লো করে আরামদায়ক ভাবে এঁটে যাবে, একদম আধুনিক ওয়েবসাইটগুলোর মত। ফলত, ডিভাইস যেমনই হোক পড়তে আরামদায়ক হবে।

তো, এই বিষয়টা মাথায় রাখলে ফরম্যাট বেছে নেওয়া সহজ।

১। যদি কমিক্স, বা গ্রাফিক্স নভেল হয় তাহলে প্রথম পছন্দ CBR/CBZ, তারপর PDF
২। আর সব বইয়ের ক্ষেত্রে যথাক্রমে EPUB, AZW, এবং Mobi.

ডিভাইস

তোমাদের হাতের কাছে যে ডিভাইস আছে, তাই নিয়ে পড়ায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

অনেকে ল্যাপটপে-ডেস্কটপে বই পড়েন, আমার তেমন সুবিধা হয় না। ফোনে-ট্যাবে পড়া যেতে পারে আরামে।

কিন্তু সবচেয়ে ভালো হয় একটা ইবুক রিডার কিনলে। ইবুক রিডারের বিশেষত্ব হচ্ছে এটার স্ক্রিনের জন্য LCD/LED ব্যবহার না করে E-paper ব্যবহার করা। ই-পেপার খানিকটা কাগজের মত কাজ করে, নিজের কোনো আলো নেই (অন্ধকারে পড়ার জন্য ফ্রন্টলাইট থাকে)। এজন্য চোখের ওপর চাপ কম পড়ে বলে দীর্ঘ সময় পড়া যায়। তাছাড়া, ই-পেপারের জন্য ব্যাটারি কম খরচ হয়।

বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিভিন্ন দামের ইবুক রিডার আছে। সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে কিন্ডেল। তা বাদে আছে Kobo, Boox, ইত্যাদি। আমি নিজে বুক্সের একটি ডিভাইস ব্যবহার করি, এবং এটাই রেকমেন্ড করবো। মূল কারণটা হচ্ছে, যদিও আপনি প্রচুর বই ফ্রি পেয়ে যাবেন, কিনতে হলে আমি খেয়াল করবেন যে কিন্ডেলের ক্ষেত্রে আপনাকে অ্যামাজন থেকেই কিনতে হচ্ছে। বুক্সের ক্ষেত্রে বিষয়টা সেরকম না। বুক্সে গুগল প্লে স্টোর দেওয়াই থাকে। ফলে আপনি যেকোনো অ্যাপ ইন্সটল করে যেকোনো কিছু করতে পারেন। অর্থাৎ, আপনি ভেন্ডর-লকড্ না, স্বাধীন।

অ্যাপ

কিন্ডেল কিনলে অ্যাপের বিশেষ চয়েজ নেই আপনার হাতে। Boox কিনলে যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ইন্সটল করতে পারবেন। আমি দুটো অ্যাপ সাজেস্ট করছি:

KOReader

পাওয়ার ইউজার, বা ফরম্যাটিং নিয়ে খুঁতখুঁতে হলে এই অ্যাপের জুড়ি নেই। আমার কাছে প্রচুর ফিচারওয়ালা এই রিডিং অ্যাপের সবচেয়ে পছন্দের ফিচারগুলো হচ্ছে:

১। খুবই রিচ নোটস্ আর হাইলাইটস্ এক্সপোর্ট
২। চমৎকার ডিকশনারির রিপোজিটোরি
৩। রিডিং স্ট্যাটিসটিক্স

Google Play Books

বাংলাদেশে সরাসরি অ্যাপটা প্লেস্টোরে পাওয়া যায় না। তবে এপিকে ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন। আমার জানামতে এখন শুধু পিডিএফ আর ইপাব আপলোড করে পড়া যায়। হাইলাইট, নোটস্, টেক্সট-টু-স্পীচ, নাইটমোড সবই আছে।

এক্সট্রা যা আছে তা হচ্ছে সিঙ্ক। আপনার সব হাইলাইটস ও নোটস্ শুধু অ্যাপ বা ব্রাউজার থেকে এভেইলএবেল তাই-ই না, আপনার গুগল ড্রাইভে ওই বইয়ের নামে একটা ফাইলে সব কপি করা থাকে। তাছাড়া আপনি অ্যাপে বা ব্রাউজারে যেখানে খুশি পড়তে পারেন, রিডিং পজিশন সিঙ্ক করে নেবে। বইয়ের রেন্ডারিংও খুব ভালো।

গুগল প্লে বুকস্ সব মেজর প্লাটফর্মেই পাওয়া যায়। ব্রাউজার, এন্ড্রয়েড, ম্যাকওএস, আইওএস অ্যাপ সবই পাবেন।

পড়া

এবার আসি, যেজন্য এত আয়োজন, অর্থাৎ সেই পড়ার ব্যাপারে। যেমন বই, তার তেমনি পড়ার ধরণ। এই মনে করুন যখন মোটা মোটা বই পড়ে লোকে, তখন রেহালের ওপর রেখে পড়ে। বিদেশি ভাষার বই পড়তে গেলে হাতের কাছে রাখে ডিকশনারি। ক্লাসের বই পড়তে গেলে হাইলাইট করে, নোট রাখে।

ইবুক পড়ার সুবিধা হচ্ছে, বইটা যতই মোটা হোক, ডিভাইসের ওজন বাড়বে না। বিদেশি শব্দের জন্য অ্যাপেই থাকে ডিকশনারি। আবার যত ইচ্ছে নোট আর হাইলাইট করুন। চাইলে পরে সেগুলোকে একটা ফাইলে এক্সপোর্ট করে সংগ্রহে রাখুন।

আমি বলবো, এই ফিচারগুলোর সুযোগ নিন। আরামদায়ক ফন্টে, আরামদায়ক মার্জিনে আনন্দের সাথে পড়ুন। নতুন শব্দে হোঁচট খেলে দেখে নিন। যা কিছু ভালো লাগে হাইলাইট করে রাখুন। আর সবকিছু করুন মিনিমাল এফোর্টে।